স্টাডি ব্লক

স্টাডি ব্লক

মাহিমের সামনের মাসেই এসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু তার এখনো যেন ঠিক মতো পড়তেই ইচ্ছে করছে না। আবার ফারিয়ার ও কিছু দিন পরেই এইচএসসি পরীক্ষা। এটা তার ক্যারিয়ারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষা। ফারিয়ার ও যেন ঠিক পড়ায় মন বসছে না। আবার ঐদিকে ভার্সিটির ছাত্রী কুহু মাত্রই তার থিওরি এক্সাম গুলো শেষ করলো। এক সপ্তাহ পর আবার ভাইভা শুরু। কুহু বুঝতে পারছে যে তাকে কতটা পড়তে হবে, এর গুরুত্ব টা কী! তবুও যেন কিছুতেই সে পড়ার টেবিলে বসতে পারছে না। এইরকম অবস্থা আমাদের কমবেশি প্রায় সবারই হয়। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষেরই পড়াশোনা করতে মন চায় না। পড়তে বসে বইয়ের পাতার দিকে তাকালে হঠাৎ এমন অসহ্য লাগে পৃথিবীটাকে! হারিয়ে যাই যেন কল্পনার রাজ্যে… এই অবস্থাকেই বলে স্টাডি ব্লক। এটা এমন একটা অবস্থা যখন আমাদের মন পড়াশোনায় কোনোভাবেই বসতে চায় না, এবং আমরা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। এই সমস্যাটি হতে পারে একাধিক কারণে— স্টাডি ব্লক হওয়ার কারণসমূহ: ১. অনিয়মিত পড়াশোনা করা। ২. পড়ার টেবিলে বসার সঠিক পরিকল্পনা না থাকা। ৩. দীর্ঘক্ষণ পড়ার চেষ্টা করা এবং বিরতি না নেওয়া। ৪. একই বিষয় বেশি সময় ধরে পড়তে থাকা। ৫. পড়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া। ৬. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ। ৭. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের অভাব। ৮. পড়ার পরিবেশ অনুকূলে না থাকা (যেমন শোরগোল, আলো কম বা বেশি, অগোছালো ডেস্ক ইত্যাদি)। স্টাডি ব্লক কাটানোর কিছু সহজ উপায়: - Pomodoro টেকনিক ব্যবহার করুন: ২৫ মিনিট পড়ুন, ৫ মিনিট বিরতি নিন। এতে মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে। - পরিবেশ পরিবর্তন করুন: সম্ভব হলে লাইব্রেরি, ছাদ, বা অন্য কোনো শান্ত জায়গায় পড়তে বসুন। - লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: একবারে বড় কিছু পড়ার পরিবর্তে ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করুন। - নোট তৈরি করুন: মূল তথ্যগুলো সংক্ষেপে লিখে নিলে মনে রাখা সহজ হয়। - পছন্দের বিষয় দিয়ে শুরু করুন: কঠিন বিষয়ের আগে সহজ ও প্রিয় বিষয় পড়ুন, এতে পড়তে বসতে ইচ্ছা করবে। - সঠিক সময়ে পড়ুন: সকালের দিকে বা ফ্রেশ থাকাকালীন কঠিন বিষয় পড়ুন, এতে মনে ধরে বেশি। - পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন: ঘুমের অভাবে মনোযোগ নষ্ট হয়, তাই ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন। - পড়াশোনাকে উপভোগ করুন: একে চাপ মনে না করে মজার মতো নিলে পড়ার আগ্রহ বাড়বে। স্টাডি ব্লক কাটানো খুব কঠিন কিছু নয়, শুধু প্রয়োজন সঠিক উপায় খুঁজে বের করা এবং ধৈর্য ধরে চেষ্টা করা।